আজকে ছিলো বছর শেষের মিটিং আমাদের রিসার্চ সেন্টারের। বছরের কাজকর্মের রিভিউ আর নতুন বছরের প্ল্যান নিয়ে ডিরেক্টরদের আলোচনা দিয়ে শুরু হল এই মিটিং। সেন্টারের বিভিন্ন উইঙের ডিরেক্টর, রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট আর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ছাত্র-ছাত্রীদের প্রায় সবার উপস্থিতিতে মুখরিত ছিলো ল্যাব। তবে কয়েকজনকে সময়মতো জানানো হয় নাই এবং সে কারণে তারা আজকে থাকতে পারে নাই তার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আলোচনার শুরুতে এই বছরের আমাদের ছাত্রছাত্রী ও রিসার্চ এসিস্ট্যান্টদের কাজকর্ম এবং সেন্টারের নানা কর্মসূচী নিয়ে আলোচনা হল। সেন্টারের ভিশন-মিশন আর একশন প্ল্যানের একটা ড্রাফট নিয়ে আলোচনা ছিল এই মিটিং এর প্রধান এজেন্ডা।
বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং পরিকল্পনা আছে আমাদের আগামী বছরের জন্য। এরই মধ্যে ডক্টর জুয়েল কুমার ঘোষ, ডক্টর খান আসাদ আর অধ্যাপক আরশাদ মোমেন যে কম্পিউটেশনাল ফিজিক্স আর এস্ট্রোনমি বিষয়ে রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট নেবেন, সেই বিজ্ঞাপন পাব্লিশড করা হয়েছে। আগামী বছর ম্যাথের আর ডাটা ইঞ্জিনিয়ারিং এর কোর্স অফার করার প্ল্যানও আগেই আমরা প্রকাশ করেছি।
এআই আর মেশিন লারনিং এও নতুন রিসার্চ এসিস্টেন্ট নিবো আমরা। এখন যারা আছে তাদের বেশ কয়েকজন এইবার উচ্চশিক্ষার জন্য এপ্লাই করেছে। আশা করছি তারা গতবারের মতোই ভালো ভালো সব বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরা ল্যাবে পিএইডি করতে চলে যাবে। তাই যারা আমাদের এখানে রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হতে আগ্রহী তারা যোগাযোগ করতে পারো। ইন্টার্নশিপ শুরু হতে পারে আগামী বছরের শুরু থেকেই। এছাড়া আগামী বছরেই নতুন এমএস প্রোগ্রাম চালু করার জোর চেষ্টা চালাবো আমরা। দুর্দান্ত একটা কারিকুলাম তৈরি হয়েছে। এআই, ডাটা সায়েন্স, এইচসিআই, আর সায়েন্টিফিক কম্পিউটিং এর স্পেশালাইজেশনের সুযোগ থাকবে তাতে। এডভান্সড ম্যাথ আর কম্পিউটিং টেকনোলজির কোর্স দিয়ে সাজানো হয়েছে কারিকুলামটি। আশা করি ছাত্রছাত্রীরা আগ্রহী হবে এই মাস্টার্স করতে। আর যারা ভর্তি হবে তাদের জন্য টিএ-আরএ-শিপের ব্যাবস্থা থাকবে।
এ বছর আমাদের সাথে বেশ কয়েকজন দেশের বাইরে থেকে রিসার্চ কোলাবরেট করছেন। তাদেরকে অশেষ ধন্যবাদ। তারা আরএ আর আন্ডারগ্রাজুয়েট ছাত্রদেরকে কো-সুপারভাইজ করছেন, পাব্লিকেশনে সাহায্য করছেন। এটাতে আমার মনে হয় সবাই উপকৃত হচ্ছে। আরো কেউ যদি এই প্রসেসে আমাদের সাথে যুক্ত হতে চান, তাদের রিসার্চ কাজের জন্য স্কিল্ড রিসার্চ স্টুডেন্ট চান তাদেরকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা এর জন্য আমরা একটা ফরমাল প্লাটফর্ম তৈরি করতে চাই। এটা হবে আগামী বছরের জন্য আমাদের আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
এরপর ছিলো আমাদের সাথে সিনিয়র প্রোজেক্ট করছে বা করতে চায় এমন প্রায় ৩০+ আন্ডারগ্রাডুয়েট ছাত্রছাত্রীদের সাথে একটা সেশন। ডক্টর মাহবুব, ডক্টর আশরাফুল ইসলাম আর সেন্টারের ডিরেক্টর আশরাফুল আমিন আমাদের সুপারভিসনে রিসার্চ আর সিনিয়ার প্রজেক্ট করার নিয়মকানুনের ব্যাপারে তাদেরকে অবহিত করলো। একটা ওয়ার্কশপ হবে শীঘ্রই আমরা যে ধরনের রিসার্চ আর প্রোজেক্ট করি সেটার ট্রেইনিং নিয়ে। খুব সম্ভবত আমরা একটা সবার জন্য (অন্তত আইইউবির ছাত্রদের জন্য) উন্মুক্ত রাখবো। বলে রাখা ভালো, আমরা ইন্টারডিসিপ্লিনারি কাজকর্ম (বায়োলজি, ফিজিক্স আর এস্ট্রোনমিতে মেশিন লারনিং, সিমুলেশন) করতে চাই আর সেই ব্যাপারে আগ্রহী ছাত্র চাই। কিছুকিছু তো করছিই, কিন্তু আরো করতে চাই সেই আলোচনাও হলো।
গ্রুপ ছবি তোলা আর ডক্টর মাহবুবের সৌজন্যে উত্তম খাওয়া-দাওয়ার পর্বের মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি হলো দিনের কর্মযজ্ঞের।
ওহ! বলতে ভুলে গেছি আগামী বছর নানা বিষয়ে পাবলিক লেকচারের আয়োজন করার পরিকল্পনা করেছি আমরা। তবে এই লেকচার সিরিজের বিষয় শুধু কম্পিউটেশন আর ডাটা ড্রিভেন মডেলিং হবে না। আমরা বায়োলজি, ম্যাথ, ফিজিক্স, এস্ট্রোনমি, আরটিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সসহ সমাজ বিজ্ঞানের নানা বিষয়ে এক্সপার্টদেরকে আমন্ত্রণ জানাবো পাবলিক লেকচার দেবার জন্য। এইটার ব্যাপারে আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই আগ্রহী। দুপুরে খেতে খেতে ইউনিভার্সের এক্সপানশন নিয়ে যে আলোচনা হলো সেটা শুনতে আমার ধারণা অনেকেরই মজা লাগতো।
সবাইকে নতুন বছরের আগাম শুভেচ্ছা রইল আমার এবং সেন্টারের পক্ষ থেকে।
– আমীন আহসান আলী, ডিরেক্টর এআই এন্ড মেশিন লার্নিং উইং, সিসিডিএস, এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, সিএসই, আইইউবি
১৯শে ডিসেম্বর ২০২৩